৪৫০০ বছরের পুরনো মমির কবর ভেবে খোঁড়া হয়েছিল! কিন্তু শেষমেশ যা পাওয়া গেল, তা হৃদয়বিদারক

 মিশরের সাক্কারায় খননের সময় ইমহোটেপের কবর বলে যাকে মনে করা হচ্ছিল, শেষপর্যন্ত মেলে ভিন্ন এক নাম ও এক দুঃখজনক সত্য। পড়ুন সেই আবিষ্কারের পুরো কাহিনি।

মিশরের সাক্কারায় খননের সময় ইমহোটেপের কবর বলে যাকে মনে করা হচ্ছিল, শেষপর্যন্ত মেলে ভিন্ন এক নাম ও এক দুঃখজনক সত্য। পড়ুন সেই আবিষ্কারের পুরো কাহিনি।

মিশরের মরুভূমিতে কবর খোঁজার সেই দিনগুলোর পরিণতি হৃদয়বিদারক!

মিশরের সাক্কারার বালির নিচে লুকিয়ে আছে এমন সব রহস্য, যা বদলে দিতে পারে ইতিহাসের রূপরেখা। বহু বছর ধরে ধারণা করা হচ্ছিল, এখানেই লুকিয়ে আছে ইমহোটেপের কবর—যিনি ছিলেন পৃথিবীর প্রথম পিরামিড নির্মাণের মূল মস্তিষ্ক। একাধিক প্রজন্ম ধরে তাঁকে ঈশ্বরের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।

তাঁর সেই কবরের খোঁজে নেমেছিলেন খ্যাতনামা প্রত্নতত্ত্ববিদ মিরোস্লাভ বার্টা। ২৪ দিন টানা খননের পর একটি অক্ষত শবাধার (সারকোফ্যাগাস) খুঁজে পাওয়া যায়। মনে করা হচ্ছিল, অবশেষে পাওয়া গেল সেই বহু প্রতীক্ষিত কবর। কিন্তু…

ভেতরে কী ছিল?

যখন কফিন খোলা হলো, দেখা গেল—ভিতরে মমির কোনও অবশিষ্ট নেই, কেবলমাত্র ভাঙা হাড়গোড়। লুটেরাদের হাতে পড়ে গেছে অনেক আগেই। সব স্বপ্ন ভেঙে গেল মুহূর্তেই।

তবু দেওয়ালে ছিল কিছু লেখা—মলিন, লাল রঙের লেখায় লেখা ছিল একটি নাম: ‘পথা-ওয়ার’। ইমহোটেপের নয়। আর এখানেই ঘুরে যায় ইতিহাস।

মিশরের সাক্কারায় খননের সময় ইমহোটেপের কবর বলে যাকে মনে করা হচ্ছিল, শেষপর্যন্ত মেলে ভিন্ন এক নাম ও এক দুঃখজনক সত্য। পড়ুন সেই আবিষ্কারের পুরো কাহিনি।
ইমহোটেপে

তবে কে ছিলেন এই ‘পথা-ওয়ার’?

তিনি ছিলেন রাজা সাহুরের আমলে এক উচ্চপদস্থ কর্মচারী ও শিল্পনির্দেশক। পিরামিড নির্মাণ ও অলংকরণে তাঁর অবদান ছিল অসামান্য। তাঁর দক্ষতার কারণে তিনি সাক্কারার সবচেয়ে পবিত্র স্থানে, ইমহোটেপের পিরামিডের কাছেই কবর পান।

কেন খোঁড়া হয়েছিল সেই বৃহৎ খাঁজ?

ইমহোটেপ কেবল পিরামিডই বানাননি, চারপাশে খনন করেছিলেন একটি বিশাল পরিখাও। প্রত্নতত্ত্ববিদ কামিল সেখানে আবিষ্কার করেন এক বিশাল কাঠের হারপুন, যা ব্যবহারযোগ্য নয়, বরং প্রতীকী—রাজার আত্মাকে পরলোকে পৌঁছাতে সাহায্য করার জন্য।

মিশরের সাক্কারায় খননের সময় ইমহোটেপের কবর বলে যাকে মনে করা হচ্ছিল, শেষপর্যন্ত মেলে ভিন্ন এক নাম ও এক দুঃখজনক সত্য। পড়ুন সেই আবিষ্কারের পুরো কাহিনি।
 মিরোস্লাভ বার্টা

এই পরিখা আদতে ছিল আধ্যাত্মিক পথ, মৃত্যুর পর আত্মার ভ্রমণের প্রতিচ্ছবি। এটি ছিল ধর্ম, স্থাপত্য ও পরকাল বিশ্বাসের এক অনন্য সমন্বয়।

চমকপ্রদ সৃষ্টির এক বিস্ময়কর যাত্রা

ডজোসারের পিরামিডের নিচে ছড়িয়ে আছে চার মাইল দীর্ঘ সুড়ঙ্গপথ, ৪০০টিরও বেশি কক্ষ, এবং একটি বিশাল গ্রানাইট কফিন। এখানেই ছিল রাজা ডজোসারের সমাধি। ছাদের গায়ে খচিত ছিল তারা—প্রতীক হিসেবে, যাতে অন্ধকারের মধ্যেও রাজা আকাশের পথে যেতে পারেন।

ইমহোটেপের নির্মাণ ছিল ইতিহাসের এক স্থায়ী ছাপ—একটি ধারণা যা পরবর্তীতে হাজার বছর ধরে প্রতিটি পিরামিডে ছড়িয়ে পড়ে।

মিশরের সাক্কারায় খননের সময় ইমহোটেপের কবর বলে যাকে মনে করা হচ্ছিল, শেষপর্যন্ত মেলে ভিন্ন এক নাম ও এক দুঃখজনক সত্য। পড়ুন সেই আবিষ্কারের পুরো কাহিনি।
পথা-ওয়ার

শেষ পর্যন্ত কী মিলল?

যদিও খননের ফলাফল ছিল হৃদয়বিদারক—ইমহোটেপের কবর পাওয়া গেল না—তবু আবিষ্কৃত হলো ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র: পথা-ওয়ার।

এবং আমরা পেলাম আরও এক প্রমাণ, ইমহোটেপের চিন্তা ও সৃষ্টি আজও কতটা জীবন্ত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন